খাওয়ার আদব-লেহাজ: ইসলাম যা শিখিয়েছে আমাদের

PoriPurno News Desk | ৬ আগস্ট ২০২৫
খাবার শুধু প্রয়োজনীয় জৈবিক চাহিদা নয়, এটি একটি সামাজিক, নৈতিক এবং ইসলামি ইবাদতের অংশ। একসাথে বসে খাওয়ার মধ্যেও রয়েছে শিষ্টাচার, রয়েছে আদব-লেহাজ। আধুনিক সভ্যতা যেখানে খাবার নিয়ে অসভ্যতা আর অসংযমের দিকে মানুষকে ঠেলে দিচ্ছে, ইসলাম সেখানে শিখিয়েছে পরিশীলিততা, ভ্রাতৃত্ব এবং পরিমিতি।
নবীজি ﷺ-কে যারা কাছ থেকে দেখেছেন, তারা সাক্ষ্য দিয়েছেন—তিনি ছিলেন অতি মার্জিত ও সংযমী খাদ্যগ্রাহী। তিনি যেমন খাওয়ার আগে ও পরে দোয়া পড়তেন, তেমনি খাবারের আচরণেও রাখতেন সৌন্দর্য। নিচে একত্রে খাওয়ার আদবগুলো তুলে ধরা হলো এবং প্রতিটির নীতিগত ভিত্তি হিসেবে কুরআন ও হাদীস থেকে প্রমাণ সংযুক্ত করা হলো।
একত্রে বসে খাওয়ার ২৬টি আদব-লেহাজ
১. সম্মিলিত পাত্রে মুখ না ঝুকিয়ে, হাত মুখে নেওয়ার নিয়মে খাওয়া
→ ইসলামে ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা ও শিষ্টাচার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সম্মিলিত পাত্রে মুখের খুব কাছাকাছি গিয়ে খাবার নেওয়া অনুচিত।
২. হাতে নেওয়া খাবারের বাকি অংশ পাতে না ফেলে, পরে মুখে দেওয়া
→ এটা পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার আদব এবং অন্যের প্রতি সম্মান।
৩. খালি হাত সম্মিলিত পাত্রে রাখা যাবে না
→ এটা রুচিহীন এবং অন্যদের জন্য অস্বস্তিকর।
৪. অনুমতি ছাড়া খাবার উলটেপালটে মেশানো যাবে না
→ এটি অন্যদের রুচি নষ্ট করতে পারে এবং অহেতুক বিশৃঙ্খলা তৈরি করে।
৫. অনুমতি ছাড়া এডিশনাল ফুড মেশানো যাবে না
→ কারণ সব খাবারের প্রতি সবার অভ্যস্ততা বা পছন্দ এক নয়।
৬. নিজের সীমানা থেকে খাবার নিতে হবে, অন্যজনের অংশে হাত না দেওয়া
→ নবী ﷺ বলেন:
كُلُوا مِمَّا يَلِيكُمْ
“তোমরা তোমার সামনে যা আছে তা থেকে খাও।”
— صحيح البخاري: ৫৩৭৬
৭. সবাই যা খাচ্ছে তা খেতে চেষ্টা করা, বিশেষ পছন্দে তাড়াহুড়া না করা
→ এটি সাম্য ও ধৈর্যের পরিচায়ক।
৮. হোস্টকে সিরিয়াল অনুসরণ করতে দেওয়া
→ সৌজন্য ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশের একটি রূপ।
৯. অন্যের পাতের দিকে তাকানো অনুচিত
→ দৃষ্টিশিষ্টতা ইসলামের সৌন্দর্য।
১০. যেই হাতে খাচ্ছেন, সেই হাত দিয়ে অন্য জিনিস না ধরা
→ পরিচ্ছন্নতা রক্ষার অন্যতম নিয়ম।
১১. খাওয়ার সময় কোঁৎ-কোঁৎ শব্দ না করা
→ রাসূল ﷺ কখনো এমন করতেন না।
১২. নিজের পাত থেকে অন্যের পাতে খাবার দেওয়া যাবে না
→ সবাই নিজের মতো সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।
১৩. যতটুকু খাবেন ততটুকুই নেবেন
→ নবীজি ﷺ বলেন:
كُلُوا وَاشْرَبُوا وَلا تُسْرِفُوا
“তোমরা খাও, পান করো, কিন্তু অপচয় করো না।”
— سورة الأعراف: ٣١
১৪. খাবারের শেষে দই বা ডাল আছে কিনা জিজ্ঞেস না করা
→ এটি অযাচিত মনে হতে পারে।
Increase Your Business with Expert Digital Solutions!
Get Unlimited Facebook Ad Credit, Guaranteed SEO Rankings, & Professional Web Development – all under one roof at MahbubOsmane.com!
14+ Years of Experience – Guaranteed SEO Rankings
800+ Satisfied Clients – Unlimited Facebook Ad Credit
Proven Results, Maximum ROI – Professional Web Development
Contact us ( +8801716988953 WhatsApp ) today and take your business to the next level! Visit: MahbubOsmane.com
১৫. টিস্যু অপচয় না করে ব্যবহার করা
→ অপচয় ইসলামে হারাম।
إِنَّ ٱلۡمُبَذِّرِينَ كَانُوٓاْ إِخۡوَٰنَ ٱلشَّيَٰطِينِ
“নিশ্চয়ই অপচয়কারীরা শয়তানের ভাই।”
— سورة الإسراء: ٢٧
১৬. নির্দিষ্ট খাবার নিয়ে আলাদা প্রশংসা না করা
→ হোস্টের জন্য অসম্মান হতে পারে।
১৭. খাওয়ার সময় শব্দ করা, নাক ঝাড়া—দৃষ্টিকটু আচরণ নয়
→ মুসলিম সবসময় মার্জিত।
১৮. খাবার দেওয়ার সময় আশপাশের কাউকে আগে দেওয়া
→ উদারতা ও ভ্রাতৃত্বের প্রতীক।
১৯. বাটি নিজের দিকে টেনে আনা না করে নিজে এগিয়ে যাওয়া
→ হাদীসে এসেছে:
لَا يُؤْمِنُ أَحَدُكُمْ حَتَّى يُحِبَّ لِأَخِيهِ مَا يُحِبُّ لِنَفْسِهِ
— صحيح البخاري: ১৩
“তোমাদের কেউ পরিপূর্ণ ঈমানদার হতে পারবে না, যতক্ষণ না সে নিজের জন্য যা ভালোবাসে, তা ভাইয়ের জন্যও ভালোবাসে।”
২০. নিজের অপছন্দের অংশ অন্যের পাতে না দেওয়া
→ এটি বিব্রতকর।
২১. সালাদ থেকে শুধু টমেটো বেছে নেওয়া যাবে না
→ অন্যের অধিকার হরণ হয় এতে।
২২. কাঁচামরিচ বা লবণ একার জন্য না চাওয়া
→ সবাইকে বিবেচনায় রাখা ইসলামের শিক্ষা।
২৩. পোলাও দেখেই সাদা ভাত আছে কিনা জিজ্ঞেস না করা
→ এটি হোস্টকে অস্বস্তিতে ফেলতে পারে।
২৪. সবার সাথে তাল মিলিয়ে খাওয়ার চেষ্টা করা
→ এই ভ্রাতৃত্বপূর্ণ মনোভাব হাদীসে প্রশংসিত:
الْمُؤْمِنُ لِلْمُؤْمِنِ كَالْبُنْيَانِ، يَشُدُّ بَعْضُهُ بَعْضًا
— صحيح البخاري: ৬০২৬
২৫. একসাথে খাওয়া শেষ করার চেষ্টা করা
→ এটা ভদ্রতা এবং সৌহার্দ্যতা।
২৬. ঢং করে “বেশি খায়নি” বলা যাবে না
→ মিথ্যাচারও নয়, অহংকারও নয়।
ইসলামের দৃষ্টিতে খাবারের সময় শিষ্টাচার
রাসূল ﷺ এর জীবনে খাওয়ার আদব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তিনি কখনো খাবার অপচয় করতেন না, কারো খাবার নিয়ে ঠাট্টা করতেন না, কারো খাওয়ার দিকে তাকাতেন না, বরং বলতেন:
إِنَّمَا بُعِثْتُ لِأُتَمِّمَ مَكَارِمَ الْأَخْلَاقِ
“আমি তো প্রেরিত হয়েছি চরিত্রের পরিপূর্ণতা সাধনের জন্য।”
— الموطأ للإمام مالك: ১৬১৪
উপসংহার
খাবার একটি নিয়ামত। এই নিয়ামতের ব্যবহারে আদব না থাকলে আমরা অকৃতজ্ঞ হয়ে যাই। একজন মুসলমানের প্রতিটি আচরণ—even খাওয়ার ধরণেও—আখিরাতে তার পুরস্কার বা শাস্তির কারণ হতে পারে।
আসুন, আমরা পরিবারে, মজলিশে, মাহফিলে ইসলামি আদব বজায় রেখে খাওয়ার এই শিক্ষাগুলো বাস্তবে প্রয়োগ করি।
Do you still have questions? Or would you like us to give you a call?
Call us at wa.me/+966549485900 or wa.me/+8801716988953 to get a free consultancy from our expert or you can directly email us at hi@mahbubosmane.com We would be happy to answer you.



