ঢাকা, ১ এপ্রিল ২০২৫: এবারের ঈদ মিছিল শুধু উৎসব নয়, এটি ছিল সাংস্কৃতিক প্রতিরোধ ও পুনর্জাগরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। দীর্ঘ ১৫ বছরের ঘনঘোর ফ্যাসিবাদের পর বাংলাদেশ এক নতুন ধারায় প্রবেশ করেছে, যেখানে বাঙালি মুসলমানদের নিজস্ব সাংস্কৃতিক পরিচয়কে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা চলছে।
ঈদের দিন সকাল থেকেই রাজধানী ঢাকায় ঈদ মিছিলের আয়োজন চোখে পড়ার মতো ছিল। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, তরুণ প্রজন্ম ও সংস্কৃতিকর্মীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন এই আয়োজনে। ঈদের মিছিলে সবচেয়ে বেশি উৎসাহ দেখা গেছে আসিফ মাহমুদের মধ্যে। একজন সেক্যুলার রাজনৈতিক নেতা হয়েও তিনি বারবার সুলতানী আমলের কথা তুলে ধরেছেন।
সাংস্কৃতিক লড়াইয়ের ধারাবাহিকতা
বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক লড়াই নতুন কিছু নয়। সেন আমল থেকেই বহিরাগত উত্তর ভারতীয় সাংস্কৃতিক আধিপত্য এ অঞ্চলে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলেছে। ব্রিটিশরা ক্ষমতায় আসার পর এই প্রভাব আরও বাড়ে, এবং ঢাকা ক্রমশ কলকাতার সাংস্কৃতিক আধিপত্যে ঢুকে যায়। তবে আবুল মনসুর আহমদ, ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ, আব্বাস উদ্দীন, কাজী নজরুল ইসলাম—এঁরা সবাই এই সাংস্কৃতিক আধিপত্যের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছেন। পরবর্তীতে এই লড়াইয়ের ধারা অব্যাহত রাখেন আখতারুজ্জামান ইলিয়াস, হুমায়ূন আহমেদ ও আল মাহমুদ।
বর্তমান তরুণ নেতৃত্বের মধ্যেও সেই ঐতিহ্যের ছাপ স্পষ্ট। চব্বিশের নেতা আসিফ-নাহিদ-আখতার, রাফে সালমান-জোনায়েদ-সাদিক—এরা সবাই অন্তরে ধারণ করেন সুলতানী বাংলার এক স্বপ্নের মানচিত্র। সেই স্বপ্নকে আজ তারা জনসাধারণের মাঝে ছড়িয়ে দিচ্ছেন লেখা, কথা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে।
ঈদ মিছিলের সাংস্কৃতিক বার্তা
মিছিলের আয়োজন ও প্রতীকী উপস্থাপনার মাধ্যমে বোঝা যায়, এটি কেবলমাত্র ধর্মীয় উৎসব নয়, বরং এক সাংস্কৃতিক বিপ্লবের সূচনা। কিছু সমালোচনা থাকলেও, সার্বিকভাবে মিছিলটি ছিল ব্যতিক্রমধর্মী ও ঐতিহ্য পুনর্জাগরণের একটি সফল প্রচেষ্টা।
মিছিলের কিছু বিশেষ দিক:
- প্রতীকী উপস্থাপনা: যদিও মিছিলে মূর্তি বা পুতুল ব্যবহারের পরিবর্তে লাইভ পারফরম্যান্স ও বিমূর্ত শিল্পকর্ম ব্যবহারের প্রস্তাব করা হয়েছিল, তবে অনেকেই বিষয়টিকে বিতর্কিত হিসেবে দেখছেন।
- ঐতিহ্যবাহী প্রাণীর ব্যবহার: সুলতানী বাংলার ইতিহাসে হাতি, বাঘ ও সিংহের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। আয়োজকরা হাতি ব্যবহারের পরিকল্পনা করলেও হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞার কারণে তা সম্ভব হয়নি। ভবিষ্যতে এসব ঐতিহ্যবাহী প্রাণীকে সাংস্কৃতিক প্রতীকে পরিণত করার বিষয়ে সরকারের সাথে আলোচনা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
- ‘সাদা ইউনিকর্ন’ বিতর্ক: মিছিলে একটি ‘সাদা ইউনিকর্ন’ বা শাদাভার ব্যবহৃত হয়, যা মধ্যযুগীয় মুসলিম পাণ্ডিত্য ও মিথোলজিতে উল্লেখিত। কিছু মানুষ একে সমকামীতা প্রচারের মাধ্যম হিসেবে দেখলেও, অনেকে এটিকে ঐতিহাসিক মুসলিম সংস্কৃতির অংশ হিসেবেই দেখছেন।
বাংলাদেশে সাংস্কৃতিক রেনেসাঁর শুরু?
দীর্ঘদিন ধরে রাষ্ট্রীয়ভাবে বাংলাদেশে ‘ইন্ডিয়ান সেক্যুলারিজম’-কে সাংস্কৃতিকভাবে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। যদিও সংবিধানে ইসলাম রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে স্বীকৃত, বাস্তবে সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে মুসলিম ঐতিহ্যের প্রকাশ খুবই সীমিত ছিল। কিন্তু মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে নতুন সরকার সাংস্কৃতিক সংস্কারের উদ্যোগ নিতে শুরু করেছে, যা অত্যন্ত ইতিবাচক।
এই সাংস্কৃতিক পুনর্জাগরণ শুধুমাত্র ধর্মীয় বিষয়ে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি একটি জাতির আত্মপরিচয়ের সংগ্রাম। ইতিহাসের আলোকে একটি শক্তিশালী মুসলিম-বাংলা পরিচয় গড়ে তোলার চেষ্টা চলছে, যা সুলতানী বাঙ্গালাহর সোনালী যুগের স্বপ্নকে নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারে।
ভবিষ্যতের পরিকল্পনা ও আশাবাদ
বিগত ১৫ বছরের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক দমননীতির পর, এবার ঈদ মিছিল নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। ভবিষ্যতের ঈদ মিছিলগুলোতে আরও ঐতিহ্যবাহী ও সাংস্কৃতিক দিক সংযুক্ত করার আশা করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে আরও সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়া দরকার।
বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম, যারা সাংস্কৃতিক স্বাধীনতার জন্য দীর্ঘদিন সংগ্রাম করে এসেছে, তারা এখন ঐতিহাসিক ও প্রথাগত মূল্যবোধ পুনঃপ্রতিষ্ঠার পথে এগিয়ে যাচ্ছে। সুলতানী বাঙ্গালাহর স্বপ্ন, যা একসময় কেবল কল্পনা ছিল, তা এখন বাস্তবায়নের পথে। ইনশাআল্লাহ, আগামী ঈদগুলোতে এই স্বপ্ন আরও সুস্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হবে।
ওয়েবসাইট: https://poripurno.com
সঠিক মার্কেটিং এর মাধ্যমে আপনার বিজনেসের সফলতা নিশ্চিত করুন!
মাহবুবওসমানী.কম দিচ্ছে আনলিমিটেড ফেসবুক অ্যাড ক্রেডিট, গ্যারান্টেড SEO র্যাঙ্কিং, এবং প্রফেশনাল ওয়েব ডেভেলপমেন্ট – সবকিছু একসাথে, ইংশাআল্লাহ্!
✅ ১৪+ বছরের অভিজ্ঞতা – গ্যারান্টেড SEO র্যাঙ্কিং
✅ ৮০০+ সন্তুষ্ট ক্লায়েন্ট – আনলিমিটেড ফেসবুক অ্যাড ক্রেডিট
✅ প্রমাণিত ফলাফল, সর্বোচ্চ ROI – প্রফেশনাল ওয়েব ডেভেলপমেন্ট
📩 আজই যোগাযোগ করুন এবং আপনার ব্যবসার সম্ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিন!
🌍 ভিজিট করুন: MahbubOsmane.com
