Bangladesh

NCP বনাম বিএনপি: সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আধিপত্যের লড়াই ও দলের ভেতর সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা

লেখক: মাহবুব ওসমান

বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এখন সবচেয়ে শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বিশেষ করে ফেসবুকের প্রভাব এতটাই বিস্তৃত যে, এটি শুধু মতামত গঠনের মাধ্যম নয়, বরং রাজনৈতিক শক্তির অন্যতম হাতিয়ার হয়ে উঠেছে। বর্তমানে National Citizen Party (NCP) এই প্ল্যাটফর্মকে দারুণভাবে ব্যবহার করে জনগণের মন জয় করতে পেরেছে, যেখানে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে।

NCP’র শক্তিশালী ডিজিটাল উপস্থিতি

NCP’র নেতারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অত্যন্ত জনপ্রিয়। তাদের ফেসবুক ফলোয়ার কয়েক মিলিয়নের বেশি। এছাড়া তারা বৈষম্যবিরোধী মতাদর্শের বিভিন্ন পেইজ নিয়ন্ত্রণ করে, যা তরুণ প্রজন্মের মাঝে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।

এছাড়া, ইনফ্লুয়েন্সার সালমান মুক্তাদিরের মতো ব্যক্তিরা NCP’তে যোগ দেওয়ার ফলে তাদের প্রচার আরও ত্বরান্বিত হচ্ছে। ফেসবুক পেইজ কেনাবেচা হয়—এটি ওপেন সিক্রেট, এবং NCP-এর কাছে ১০০টি ১ লক্ষ ফলোয়ারের পেইজ কেনা কোনো ব্যাপারই নয়। তাদের বিপুল ফান্ড থাকার কারণে তারা খুব সহজেই ১০ কোটি ফেসবুক ব্যবহারকারীর সামনে নিজেদের ন্যারেটিভ প্রতিষ্ঠা করতে পারে। এই বিশাল অনলাইন উপস্থিতির কারণে তারা সহজেই জনমত গঠন করতে সক্ষম হয়।

বিএনপি’র ব্যর্থতা: পিছিয়ে পড়ার কারণ কী?

NCP যেখানে ন্যারেটিভ তৈরি করতে ব্যস্ত, সেখানে বিএনপির বেশিরভাগ জেলা ও মহানগর পর্যায়ের নেতারা এখনও রাজনৈতিকভাবে মুর্খ অবস্থানে রয়ে গেছেন। তাদের সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের ধরন অত্যন্ত দুর্বল। অধিকাংশ নেতার ফেসবুক পেজে কেবলমাত্র কম্বল বিতরণ, ইফতার মাহফিল, ভাষণ দেওয়া এবং একে অপরকে “অমুক ভাই”, “তমুক ভাই” বলে সম্বোধন করার চিত্র দেখা যায়।

এমনকি, বিএনপির কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নেতারাও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কার্যকর প্রচারণা চালাতে ব্যর্থ। বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের মধ্যে যাদের ২ লক্ষ বা তার বেশি ফলোয়ার রয়েছে, তাদের পোস্টের বিষয়বস্তু শুধু মিছিল-মিটিংয়ের ছবিতে সীমাবদ্ধ থাকে।

এছাড়া, বিএনপির মিডিয়া সেল নিয়ন্ত্রকরা প্রায়শই অসত্য তথ্য ছড়িয়ে দেয়, যা দলকে হাসির পাত্রে পরিণত করছে। তাদের পোস্টগুলোতে সঠিক তথ্য ও স্ট্র্যাটেজিক ন্যারেটিভ তৈরির চেয়ে গুজব ও বিভ্রান্তি ছড়ানোর প্রবণতা বেশি দেখা যায়। এমন অবস্থায় ১০ কোটি মানুষের সামনে বিএনপির এই ‘বুমার’ নেতারা টিকে থাকতে পারবে কি না, তা নিয়েই সন্দেহ আছে

বিএনপি’র সংস্কার কতটা জরুরি?

এই পরিস্থিতিতে বিএনপির সামনে দুটি পথ খোলা—

১. বিগত দিনের রাজনৈতিক ধারা অনুসরণ করে ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাওয়া
২. নিজেদের সাংগঠনিক ও প্রচারণার কৌশল যুগোপযোগী করে NCP’র ডিজিটাল আধিপত্যের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা

বিএনপি যদি টিকে থাকতে চায়, তাহলে তাদের নিম্নলিখিত সংস্কারগুলো জরুরি—

বুমার নেতাদের সরানো: বিএনপির মধ্যে অনেক প্রবীণ নেতা রয়েছেন, যারা বর্তমান সময়ের রাজনৈতিক বাস্তবতা ও ডিজিটাল প্রভাব সম্পর্কে ধারণাই রাখেন না। দলকে টিকিয়ে রাখতে হলে নবীন নেতৃত্বকে সামনের সারিতে আনতে হবে। বিশেষ করে মাহদি আমিন, আমিনুল হকসহ অন্যান্য তরুণ নেতাদের সামনে আনতে হবে

সাংগঠনিক ন্যারেটিভ গঠন: বিএনপির নেতাদের অনলাইনে সক্রিয়ভাবে দলীয় নীতিমালা প্রচার করতে হবে। ৩১ দফা দাবি নিয়ে নেতারা নিজেরাই জানেন না, এমন অভিযোগ সত্য হলে এটি দলের জন্য একটি লজ্জাজনক বিষয়। এই সংস্কার অবিলম্বে দরকার।

মিডিয়া সেলের পুনর্গঠন: বিএনপির মিডিয়া সেল বর্তমানে নিষ্ক্রিয় ও অদক্ষ। এটি তরুণদের হাতে তুলে দিতে হবে, বিশেষ করে ছাত্রদলের তরুণ নেতাদের হাতে মিডিয়া সেলের দায়িত্ব দেওয়া উচিত

সোশ্যাল মিডিয়ায় বিপুল বিনিয়োগ: অন্তত কয়েক কোটি টাকা মিডিয়া সেলের পেছনে বিনিয়োগ না করলে বিএনপি বর্তমান রাজনৈতিক পরিসরে টিকে থাকতে পারবে না। এটি সময়ের দাবি।

নির্বাচন নিয়ে স্ট্র্যাটেজি পরিবর্তন: শুধুমাত্র নির্বাচন নির্বাচন বলে ঘ্যান ঘ্যান করলে দলের ভেতরেই বিরক্তি তৈরি হবে। বরং দলকে সুসংগঠিত করে একটি স্পষ্ট নির্বাচনী রোডম্যাপ তৈরি করতে হবে। প্রয়োজনে ড. ইউনুসসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে গিয়ে কৌশল নির্ধারণ করতে হবে

উপসংহার

বর্তমান সময়ের রাজনীতি মূলত ন্যারেটিভের লড়াই। বিএনপি যদি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করতে না পারে, তবে তারা ভবিষ্যতে রাজনৈতিকভাবে আরও কোণঠাসা হয়ে পড়বে। তাই এখনই সময় বিএনপির ভেতর বিস্তৃত সংস্কার চালানোর। অন্যথায়, NCP’র মতো আধুনিক রাজনৈতিক দলগুলোর সামনে বিএনপি সম্পূর্ণরূপে হারিয়ে যাবে


📰 আরও বিশ্লেষণমূলক সংবাদ পড়তে ভিজিট করুন: https://poripurno.com

সঠিক মার্কেটিং এর মাধ্যমে আপনার বিজনেসের সফলতা নিশ্চিত করুন! 

মাহবুবওসমানী.কম দিচ্ছে আনলিমিটেড ফেসবুক অ্যাড ক্রেডিট, গ্যারান্টেড SEO র‍্যাঙ্কিং, এবং প্রফেশনাল ওয়েব ডেভেলপমেন্ট – সবকিছু একসাথে, ইংশাআল্লাহ্‌!

১৪+ বছরের অভিজ্ঞতা – গ্যারান্টেড SEO র‍্যাঙ্কিং
৮০০+ সন্তুষ্ট ক্লায়েন্ট – আনলিমিটেড ফেসবুক অ্যাড ক্রেডিট
প্রমাণিত ফলাফল, সর্বোচ্চ ROI – প্রফেশনাল ওয়েব ডেভেলপমেন্ট

📩 আজই যোগাযোগ করুন এবং আপনার ব্যবসার সম্ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিন!
🌍 ভিজিট করুন: MahbubOsmane.com

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button