দেশে বিনিয়োগ আসার খবরে খুশি, কিন্তু কেন যেন সেটা এখন ‘অসাধারণ’ মনে হচ্ছে!

📅 প্রকাশিতঃ ১৪ এপ্রিল ২০২৫
✍️ নিউজ ডেস্ক | MahbubOsmane.com নিউজ

গত ১৮ বছরের দীর্ঘ সময়জুড়ে একের পর এক লুটপাট, জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করার নানা কৌশল আর দুর্নীতির রাজনীতির কারণে আমাদের দেশের মানুষের চাওয়া-পাওয়ার মানদণ্ড যেন নিচে নামতে নামতে এখন শূন্যের কোঠায় এসে ঠেকেছে। যে দেশ এক সময় তার সম্ভাবনাময় ভৌগোলিক অবস্থান ও বিপুল জনশক্তির কারণে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে একধরনের স্বাভাবিক সক্ষমতা রাখত, সেই দেশেই আজ বিদেশি বিনিয়োগ আসার খবরে জাতি যেন আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়ে।

এটা কি শুধুই খুশির খবর? নাকি এক করুণ বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি?

একজন সচেতন নাগরিক সামাজিক মাধ্যমে হতাশা প্রকাশ করে লেখেন,

“গত ১৮ বছর লুটপাট করতে করতে, সাধারণ মানুষকে ভুজুং ভাজুং দিতে দিতে দেশটাকে আর দেশের মানুষের প্রত্যাশাকে কত নিচে নামানো হয়েছে যে, এখন বাহিরের দেশ থেকে বিনিয়োগ আসার খবর দেখে আমাদের খুশিতে নাচতে মন চাইছে। অথচ আমাদের বিপুল সংখ্যক জনমানুষ আর অনেক সম্ভাবনাময়ী ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে নানান দেশ থেকে এই রকম বিনিয়োগ আসা খুবই সাধারণ ব্যাপার ছিল। এই সাধারণ ব্যাপারটা এখন খুবই অসাধারণ মনে হচ্ছে।”

তাঁর এই বক্তব্যে দেশপ্রেম যেমন প্রকাশ পেয়েছে, তেমনি ফুটে উঠেছে দীর্ঘদিনের শাসনব্যবস্থার প্রতি ক্ষোভও।

তিনি আরও বলেন,

“মন থেকে দোয়া করি, আল্লাহ্ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে আরো হায়াত দান করুন। আর উঠতে বসতে নির্বাচন চাইতে থাকা অথর্ব দলটাকে আরো অথর্ব বানিয়ে দিন। আমীন!” 🤲🏼

📌 প্রেক্ষাপট:

ড. মুহাম্মদ ইউনূস – নোবেল বিজয়ী, বাংলাদেশের গর্ব। তাঁর নেতৃত্ব, দৃষ্টিভঙ্গি এবং সততা দেশের গৌরবের প্রতীক হয়ে আছে বহুদিন ধরে। এমন এক সময় যখন দেশের নেতৃত্ব সংকট, নৈতিকতা ও দূরদর্শিতার অভাবে হিমশিম খাচ্ছে, তখন জনগণ তাঁর মতো ব্যক্তিত্বদের কাছ থেকেই আশার আলো খোঁজে।

অন্যদিকে, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সুস্থ প্রতিযোগিতার পরিবর্তে ক্ষমতা ধরে রাখার অসুস্থ প্রতিযোগিতা জাতিকে হতাশ করেছে বারবার। যার ফলে দেশের অগ্রগতির সম্ভাবনা বারবার বাধাগ্রস্ত হয়েছে।

🌍 বাস্তবতা:

বর্তমানে একটি বিদেশি বিনিয়োগের ঘোষণায় দেশব্যাপী যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়, তা আসলে আমাদের সম্ভাবনাগুলো কীভাবে চাপা পড়ে গেছে – তারই প্রতিচ্ছবি। অথচ এই ধরনের বিনিয়োগ এক সময় ছিল নিয়মিত ঘটনা, যা অর্থনীতিকে এগিয়ে নেওয়ার মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করত।

📢 উপসংহার:

বিদেশি বিনিয়োগ আসুক, দেশ এগিয়ে যাক – সেটাই আমরা সবাই চাই। তবে সেই অগ্রগতি যেন হয় টেকসই, স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতার ভিত্তিতে। জাতির প্রত্যাশাকে ‘অসাধারণ’-এ পরিণত না করে আবার ‘স্বাভাবিক’ করে তোলাই হোক আগামী দিনের অঙ্গীকার।