আফ্রিকার প্রত্যন্ত গ্রামে বিটকয়েন বিপ্লব: বিদ্যুৎ অপচয় রোধে ‘গ্রিডলেস’ এর যুগান্তকারী পদক্ষেপ

Knowledge is power
The Future Of Possible
Hibs and Ross County fans on final
Tip of the day: That man again
Hibs and Ross County fans on final
Spieth in danger of missing cut

📍 মাহবুব ওসমান | https://poripurno.com | আন্তর্জাতিক ডেস্ক | পোস্ট ইনফোঃ Rasel Ahmed

আফ্রিকার প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলো এখন শুধুমাত্র কৃষিকাজ কিংবা বুনোপ্রকৃতির কারণে নয়, বরং প্রযুক্তির এক নতুন বিপ্লবের কারণে আলোচনায় এসেছে। বিদ্যুৎ অপচয়ের সমাধান ও ডিজিটাল আয়ের চমৎকার সমন্বয়ে সেখানে গড়ে উঠেছে বিটকয়েন মাইনিং কন্টেইনার ক্লাস্টার — যার নেতৃত্ব দিচ্ছে একটি উদ্ভাবনী কোম্পানি ‘গ্রিডলেস’।

💡 প্রযুক্তি ও বিদ্যুতের মিলনমঞ্চ

এই মাইনিং কন্টেইনারগুলোর প্রতিটিতেই বসানো হয়েছে প্রায় ১২০টি শক্তিশালী গ্রাফিক্স কার্ডসমৃদ্ধ কম্পিউটার, যেগুলোর কাজ হলো বিটকয়েন মাইনিং — অর্থাৎ বিটকয়েন নেটওয়ার্কের ট্রানজেকশন প্রসেস করা এবং এর বিনিময়ে ক্ষুদ্র অংশের বিটকয়েন উপার্জন করা।

প্রতিটি কন্টেইনার থেকে প্রতিদিন আয় হচ্ছে প্রায় ৬০০ ডলার, মাসে ১২,৯৯০ ডলার, এবং বছরে প্রায় ১৫৬,০০০ ডলার। তবে এই আয়ের পেছনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো নিরবিচ্ছিন্ন ও সস্তা বিদ্যুৎ সরবরাহ।

🌊 নদীর স্রোত থেকে ব্লকচেইনে

এই বিদ্যুৎ আসছে আফ্রিকার পাহাড়ি খরস্রোতা নদীগুলোর ওপর নির্মিত হাইড্রো-পাওয়ার প্লান্ট থেকে। এসব প্লান্ট মূলত অতিরিক্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করলেও স্থানীয় গ্রাহক না থাকায় সেই বিদ্যুৎ বেশিরভাগ সময় অপচয় হচ্ছিলো।

বিদ্যুৎ সংরক্ষণ করা সম্ভব নয়, আবার নিকটবর্তী কোনো বিদ্যুৎ গ্রিড না থাকায় তা বাইরে পাঠানোও যাচ্ছিল না। ঠিক এই সুযোগটাই কাজে লাগায় গ্রিডলেস। তারা অব্যবহৃত এই বিদ্যুৎ কিনে নিয়ে বিটকয়েন মাইনিং কন্টেইনার বসিয়েছে এবং দু’পক্ষেরই লাভ নিশ্চিত করেছে।

🛠️ স্থানীয় মানুষ, স্থানীয় সমাধান

বিটকয়েন মাইনিং মানেই শুধু উন্নত প্রযুক্তি নয়; এর সাথে জড়িত রয়েছে মানবসম্পদ উন্নয়ন। গ্রিডলেস কেবল প্রযুক্তি নিয়ে আসেনি, সঙ্গে এনেছে স্থানীয় কর্মসংস্থানের সুযোগ। আফ্রিকান যুবকেরা অল্প ট্রেনিং নিয়েই এসব কন্টেইনার নির্মাণ, কম্পিউটার ক্লাস্টার সেটআপ, এবং রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করছে।

মাইনিং সিস্টেম গুলো জটিল কিছু নয়; সহজলভ্য প্রযুক্তি দিয়ে তা তৈরি করা সম্ভব। ফলে স্থানীয়রা খুব সহজেই এই নতুন ধরনের কাজের সাথে মানিয়ে নিতে পারছে।

🔍 বিটকয়েন মাইনিং কীভাবে কাজ করে?

বিটকয়েন মাইনিং মূলত একটি ট্রানজেকশন প্রসেসিং সিস্টেম। বিশ্বব্যাপী প্রতি সেকেন্ডে হাজার হাজার বিটকয়েন লেনদেন হয়। এসব লেনদেন ভেরিফাই এবং রেকর্ড করার জন্য দরকার শক্তিশালী কম্পিউটার – যেগুলোই এই কন্টেইনারে কাজ করছে।

এই প্রসেসের জন্য যারা কম্পিউটার শক্তি দেয়, তাদেরকে ‘মাইনার’ বলা হয়। তারা প্রতিবার একটি সফল প্রসেসের বিনিময়ে বিটকয়েনের একটি ক্ষুদ্র অংশ লাভ করে থাকে।

📈 ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা

গ্রিডলেস-এর এই মডেল এখন শুধুমাত্র আফ্রিকায় সীমাবদ্ধ নয়, বরং উন্নয়নশীল বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে এর অনুকরণে প্রকল্প শুরু হতে পারে। বিশেষ করে যেখানে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় কিন্তু তা ব্যবহারের ব্যবস্থা নেই — সেসব অঞ্চলে এই মডেল হতে পারে প্রযুক্তিগত এবং অর্থনৈতিক মুক্তির এক নতুন দিগন্ত।

সম্পাদনা ও প্রকাশনায়: মাহবুব ওসমান – https://poripurno.com